ঢাকা,শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

প্রসুতি ও নবজাতকের জীবন নিয়ে শঙ্কা

চকরিয়া বদরখালী বাজারে ডেলিভারি সেন্টার খুলে চলছে অপচিকিৎসা

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলান উপকূল অঞ্চলের জনপদ বদরখালী বাজারের প্রধান সড়কে ডেলিভারি সেন্টার খুলে দিব্যি অস্ত্রোপচার যাচ্ছেন উম্মে হাবিবা নামের এক নারী। একটি পাকা ভবনের ছোট ছোট তিনটি কক্ষ। তিন কক্ষে তিনটি শয্যা। কক্ষের বাইরে সাইনবোর্ড। তাতে লেখা রয়েছে ডা: উম্মে হাবিবা, ডেলিভারি, চেকআপ ও ধাত্রীবিদ্যায়,প্রসূতি ও স্ত্রী রোগে অভিজ্ঞ’।

অভিযোগ উঠেছে, প্রসুতি চিকিৎসাবিদ্যায় কোনো ধরনের ডিগ্রি না থাকলেও উন্মে হাবিবা দিব্যি অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবও করে আসছেন তিনি। উম্মে হাবিবার বাবার বাড়ি ঈদগাঁও উপজেলায় আর শ্বশুরবাড়ী চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কুতুব দিয়া পাড়ায়। তার স্বামী নাছির উদ্দিন বদরখালী বাজারে ফার্মেসি দোকানদার।

স্থানীয় লোকজনের দাবি উম্মে হাবিবা চিকিৎসাবিদ্যায় কোনো ডিগ্রি না থাকলেও ডেলিভারি সেন্টার খুলে অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি রেখে ডেলিভারি করাচ্ছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন লোভনীয় সাইনবোর্ড টাংকিয়ে টাকার লোভে গরিব অসহায় রোগীদের অপ্রয়োজনীয় ভাবে সিজারও করার ঝুঁকি ও নে উম্মে হাবিবা। তার ভুল চিকিৎসার কারণে মা হারিয়েছে নবজাতক শিশু ,নবজাতক শিশু হারিয়েছে মা।বাসাভাড়া নিয়ে সেটিকে চেম্বার ও ক্লিনিক বানিয়ে শয্যা বসিয়েছেন।

সম্প্রতি সময়ে উম্মে হাবিবা ডেলিভারি সেন্টারে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করতে গিয়ে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের তিতামাঝির পাড়ার আবুল হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হয়।

এছাড়াও কালারমারছড়া ইউনিয়নের সুমনের স্ত্রী হালিমা বেগম , বদরখালী ইউনিয়নের মনজুর আলমের স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে, বদরখালী ইউনিয়নের কালুর স্ত্রী বেঁচে থাকলেও তার ফুটফুটে শিশুর মৃত্যু হয় ভুল ডেলিভারির কারণে। তাছাড়া উম্মে হাবিবের বিরুদ্ধে অসংখ্য লিখিত এবং মৌখিক অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে উম্মে হাবিবা দাবি করেন, আমি ধাত্রী হিসেবে সুপরিচিত। গরিব গৃহবধূরা তাঁদের কাছে ডেলিভারির জন্য আসেন। ডেলিভারি রোগীদের সুবিধার্থে বাসাভাড়া নিয়ে শয্যা বসানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজন তাঁদের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শোভন দত্ত বলেন, ওই নারী বদরখালী বাজারে চেম্বার খুলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে প্রসূতি ও শিশুর চিকিৎসা দেন শুনেছি। কিছুদিন আগে অভিযান চালিয়ে ওই নারীর চেম্বার সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মুলত অভিযুক্ত উন্মে হাবিবা উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে চিকিৎসার নামে এই প্রতারণা করে যাচ্ছে। এইধরনের অপচিকিৎসায় প্রসুতি ও নবজাতকের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। নতুন করে সে চেম্বার খুলে আগের কায়দায় অচিকিৎসা করার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: